বল ও গতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

বল ও গতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন : লব্ধি বল কাকে বলে ?

কোনো বস্তুর ওপর ক্রিয়াশীল কতকগুলি বলের পরিবর্তে একটি বল ক্রিয়া করলে যদি ক্রিয়াশীল বলগুলির মতো একই ফল সৃষ্টি করে তবে তাকে ওই বলগুলির লব্ধি বল বলা হয়

প্রশ্ন : বস্তুর ওপর প্রযুক্ত বলের প্রভাব কী কী হতে পারে ?

বল প্রয়োগ করে—(i) স্থির বস্তুকে গতিশীল করা যায়, (ii) গতিশীল বস্তুর বেগের মান বা অভিমুখ বা উভয়ই পরিবর্তন করা যায়, (iii) গতিশীল বস্তুকে থামানো যায় অথবা (iv) বস্তুর আকার বা আকৃতির পরিবর্তন করা যায় ।

প্রশ্ন : প্রতিমিত বল (balanced force) কাকে বলে ?

→ কোনো বস্তুর ওপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি ক্রিয়াশীল বলগুলির লম্বি (resultant) শূন্য হয়, তাহলে ওই বলগুলিকে প্রতিমিত বল বলা হয় ।

প্রশ্ন : কার্যকর বল (effective force) বলতে কী বোঝ ? এর প্রভাবে বস্তুর কোন্ ধর্মের পরিবর্তন ঘটে ?

কোনো বস্তুর ওপর এক বা একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি ক্রিয়াশীল বলগুলির লম্বি (resultant) শূন্য না হয়, তাহলে ওই বলগুলিকে কার্যকর বল বলা হয় কার্যকর বলের প্রভাবে বস্তুর গতীয় ধর্মের (স্থিতি বা গতির পরিবর্তন ঘটে থাকে।

প্রশ্ন : অভ্যন্তরীণ বল ও বাহ্যিক বল কাকে বলে ? [1+1]

কোনো বস্তুর ওপর বল প্রযুক্ত হওয়ার সময় যদি বলের প্রয়োগকারী ওই সংস্থার অংশ বিশেষ হয় তাহলে প্রযুক্ত বল গতিবেগের পরিবর্তন করতে পারে না, গতিবেগের পরিবর্তনের শুধুমাত্র চেষ্টা করে, সেই বলকে অভ্যন্তরীণ বল বলা হয় ৷

কোনো বস্তুর ওপর বল প্রযুক্ত হওয়ার সময় যদি বলের প্রয়োগকারী ও বস্তু আলাদা সংস্থা হয় তাহলে প্রযুক্ত বল বস্তুর গতিবেগের পরিবর্তন করে বা গতিবেগের পরিবর্তনের চে করে। সেই বলকে বাহ্যিক বল বলে।

প্রশ্ন : কোনো বস্তুর অবস্থার পরিবর্তনের জন্য কোন্ বল দায়ী ? নিউটনের প্রথম গতিসূত্রের সাহায্যে উত্তর দাও।

— নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে এটা বোঝা যায় যে, কোনো বস্তুর স্থিতিশীল বা গতিশীল অবস্থার পরিবর্তন একমাত্র বাহ্যিক কার্যকর বলের দ্বারাই সম্ভব। অভ্যন্তরীণ বল বা বাহ্যিক প্রতিমিত বলের দ্বারা সম্ভব নহে।

প্রশ্ন : নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে বলের ধারণা দাও।

নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে বলের যে সংজ্ঞা পাওয়া যায়। তা প্রকৃতিবাচক (qualitative)। কোনো বস্তুর ওপর বাহ্যিক কার্যকর বল প্রযুক্ত না হলে বস্তুর গতিবেগের কোনো পরিবর্তন হয় না। অর্থাৎ বস্তুর গতিবেগ শূন্য (স্থির বস্তু) বা কোনো নির্দিষ্ট মান (সমবেগসম্পন্ন) যাই হোক না কেন তা অপরিবর্তিত থাকে।

প্রশ্ন : নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে কী কী জানা যায়?

> নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে যে জিনিসগুলো জানা যায়—

(i) বস্তুর জাড্য ধর্ম, 

(ii) বলের প্রকৃতিগত সংজ্ঞা, 

(iii) বস্তুর গতিবেগ পরিবর্তন শুধুমাত্র বাহ্যিক অপ্রভিমিত বাসের দ্বারাই সম্ভব, অভ্যন্তরীণ বলের দ্বারা সম্ভব নয় ও

(iv) কোনো বস্তুর স্থিতিশীল ও সমবেগে গতিশীল অবস্থার মধ্যে যে একটা। অভিন্নতা আছে তার স্পষ্ট বিবৃতি।

প্রশ্ন : জাড্য কাকে বলে ? কয় প্রকার ও কী কী ? 

যে ধর্মের জন্য কোনো বস্তু, স্থিতিশীল বা গতিশীল যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, সেই অবস্থাতেই থাকতে চায় এবং সেই অবস্থার পরিবর্তনের প্রচেষ্টাকে বাধা দেয় তাকে জাড্য বলে। 

জাড্য দু-প্রকার—

(i) স্থিতিজাড্য ও 

(ii) গতিজাড্য।

প্রশ্ন: স্থিতিজাড্য ও গতিজাড্য কাকে বলে ?

কোনো স্থির বস্তুর, সর্বদা স্থির থাকতে চাওয়ার প্রবণতাকে স্থিতিজাড্য বলা হয় ৷

কোনো গতিশীল বস্তুর, সর্বদা সমবেগে সরলরেখা বরাবর গতিশীল থাকতে চাওয়ার প্রবণতাকে গতিজাড্য বলা হয় ৷

প্রশ্ন : স্থির বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে, বাসের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা পিছন দিকে হেলে যায় কেন?

একটি বাসের ভিতর কিছু যাত্রী দাঁড়িয়ে আছে। এবার বাসটি হঠাৎ করে চলতে শুরু করলে দেখা যায় যাত্রীরা পিছন দিকে হেলে যায়। এর কারণ হল গাড়ি যখন স্থির ছিল তখন যাত্রীরাও স্থির ছিল কিন্তু গাড়ি যখন হঠাৎ চলতে শুরু করল তখন যাত্রীদের নিম্নাংশ গাড়ির সংলগ্ন বলে গতিশীল হয় কিন্তু ঊর্ধ্বাংশ তখনও স্থিতিজাড্যের জন্য স্থির থাকতে চায় ও তাই যাত্রীরা পিছন দিকে হেলে যায়।

প্রশ্ন : একটি জলপূর্ণ বালতি হঠাৎ করে ঠেললে কী হবে ?

বালতিতে কানায় কানায় পূর্ণ জল নিয়ে বালতিকে হঠাৎ করে গতিশীল করলে বালতি থেকে কিছুটা জল পিছনের দিকে চলকিয়ে পড়ে। এর কারণ হল বালতির ওপর সামনের দিকে হঠাৎ বল প্রয়োগ করা হলে বালতি সামনের দিকে গতিশীল হয় কিন্তু বালতির জল তখনও স্থিতিজাড্যের জন্য স্থির থাকতে চায় তাই পিছন দিকে চলকিয়ে পড়ে।

প্রশ্ন : কম্বল থেকে ধুলো ঝাড়ার জন্য, কম্বলকে দড়ি থেকে ঝুলিয়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয় কেন?

কম্বল থেকে ধুলো ঝাড়ার সময় কম্বলকে কোনো অবলম্বন থেকে ঝুলিয়ে সজোরে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। এক্ষেত্রে দেখা যায় কম্বল থেকে ধুলো ঝরে পড়ছে। এর কারণ হিসেবে

বলা যায় কম্বলকে সজোরে আঘাত করার ফলে প্রযুক্ত বলের দিকে কম্বল গতিশীল হয়। কিন্তু কম্বলের গায়ে আলগাভাবে লেগে থাকা ধুলোবালি স্থিতিজাড্যের জন্য স্থির অবস্থায় থাকতে চায়। এর ফলস্বরূপ ধুলোবালি কম্বল থেকে পৃথক হয়ে ঝরে পড়ে।

প্রশ্ন : ঘূর্ণায়মান বৈদ্যুতিক পাখার সুইচ অফ করার পরেও কিছুক্ষণ ধরে পাখা ঘুরতে থাকে কেন ?

ঘূর্ণায়মান বৈদ্যুতিক পাখার সুইচ অফ করে দিলেও পাখাটি সঙ্গে সঙ্গে থেমে যায় না। গতিজাড্যের জন্য সুইচ অফ করার পর আরও কয়েকবার ঘোরার পর থামে।

প্রশ্ন : দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগী সীমারেখায় পৌঁছে থেমে যেতে পারে না কেন?

দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীদের লক্ষ্য থাকে সবার আগে সীমারেখা অতিক্রম করা। এই উদ্দেশ্যে সীমারেখা স্পর্শ করার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিযোগী কখনোই তার বেগ কমাতে চায় না। এখন, সীমারেখায় পৌঁছেই প্রতিযোগী যদি হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে পড়তে চায় তবে তার দেহের ঊর্ধ্বাংশ গতিজাড্য বজায় রাখার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায়। ফলে প্রতিযোগীর হুমড়ি খেয়ে সামনের দিকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। পড়ে গিয়ে আঘাত থেকে বাঁচার জন্যই প্রতিযোগী সীমারেখায় ছেই থামতে চায় না, বরং ধীরে ধীরে তার বেগ কমিয়ে আনার আরও কিছুটা দৌড়ে তারপর থামে।

প্রশ্ন :নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে একক বলের সংজ্ঞা দাও।

m ভরের কোনো বস্তুর ওপর F বল প্রয়োগ করা হলে যদি a ত্বরণ সৃষ্টি হয় তবে নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্রানুযায়ী, F = ma। এখন m = 13 a = 1 হলে, F = 1 .1 = 1 হয়। সুতরাং, একক ভরের বস্তুর ওপর যে পরিমাণ বল প্রয়োগের ফলে বস্তুটিতে একক ত্বরণ উৎপন্ন হয়, সেই মানের বলকে একক বল হিসেবে ধরা হয় ।

প্রশ্ন : CGS পদ্ধতি ও SI-তে বলের পরম এককের সংজ্ঞা লেখো ও একক দুটির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করো ।

CGS পদ্ধতি ও SI-তে বলের পরম একক যথাক্রমে ডাইন (dyn) ও নিউটন (N)।

1 g ভরের কোনো বস্তুর ওপর যে বল প্রয়োগ করা হলে, বস্তুর 1 cm/s2 ত্বরণ সৃষ্টি হয় তাকে 1 dyn বলা হয়

.: 1 dyn 1g.cm/s²

1 kg ভরের কোনো বস্তুর ওপর যে বল প্রয়োগ করা হলে, বস্তুর 1 m/S2

ত্বরণ সৃষ্টি হয় তাকে I N বল বলা হয় ।

.: 1 N = 1 kg • m/S2

নিউটন (N) ও ডাইনের (dyn) মধ্যে সম্পর্ক—

1 N = 1 kg • m/S2= 1000 g × 100 cm /S2 = 105 dyn

প্রশ্ন : CGS পদ্ধতি ও SI-তে বলের অভিকর্ষীয় এককের সংজ্ঞা লেখো ও এককগুলির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরম এককের সম্পর্ক লেখো।

→ CGS পদ্ধতি ও SI-তে বলের অভিকর্ষীয় একক যথাক্রমে গ্রাম-ভার (g-wt) ও কেজি-ভার (kg-wt)।

1g ভরের কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বল দ্বারা নিজ কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে তাকে 1 g-wt বলা হয় । অভিকর্ষজ ত্বরণ, g = 980 cm/sS2 হলে,

1 g-wt = 1 g x 980 cm/S2 = 980 dyn 1 kg ভরের কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বল দ্বারা নিজ কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে তাকে 1 kg-wt বলা হয় । অভিকর্ষজ ত্বরণ, g = 9.8m/S2

 হলে,

1 kg-wt = 1 kg x 9.8 m/S2= 9.8 N

You May Also Like this Content:

You May Also Like this Content:

  1. জীবন ও তার বৈচিত্র- ক্লাস ৯ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর—–> Click here
  2. জীবন ও তার বৈচিত্র্য প্রশ্ন উত্তর ক্লাস ৯——->Click Here
  3. গ্রহরুপে পৃথিবী- CLASS 9 SHORT Question
  4. পরিমাপ- ক্লাস ৯ প্রশ্ন উত্তর | Measure Class 9 Question Answer
  5. জীববিদ্যা ও তার শাখাসমূহ – Class 9
  6. পরিমাপ- ক্লাস ৯ প্রশ্ন উত্তর | Measure Class 9 Question Answer
  7. পরিমাপ Question Answer Class 9
  8. Class 9 Geography Chapter 1 MCQ of Graharupa Prithibi
  9. গ্রহরুপে পৃথিবী -Class 9 Question Answer
  10. Class 10 Short Question Life Science Chapter-1
  11. Force and Speed class 9 Question Answer

12. বল ও গতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর ও পার্থক্য লেখো

পরিমাপ- ক্লাস ৯ প্রশ্ন উত্তর | Measure Class 9 Question Answer

পরিমাপ- ক্লাস ৯ প্রশ্ন উত্তর 

Measure Class 9 Question Answer

 1. ভৌত রাশি কাকে বলে? কয়েকটি ভৌত রাশির উদাহরণ দাও?

উত্তরঃ যে সমস্ত প্রাকৃতিক বিষয়কে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পরিমাপ করা যায় তাদের ভৌত রাশি বলা হয়। 

উদাহরণ: দৈর্ঘ্য, ভর, উন্নতা, কার্য, সরণ, বেগ, স্মরণ, বল প্রভৃতি হল ভৌত রাশি।

2. সমস্ত প্রাকৃতিক বিষয়কে কি ভৌত রাশি বলা যায়—উদাহরণ সহযোগে ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ আমরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিষয় দেখি বা অনুভব করি। কিন্তু এদের মধ্যে সবকটি পরিমাপযোগ্য নয়। যেমন- দয়া, স্নেহ, রাগ প্রভৃতি। যেহেতু এই সমস্ত প্রাকৃতিক বিষয় পরিমাপযোগ্য নয়, তাই এদের ভৌত রাশি বলা হয় না। আবার দৈর্ঘ্য, ভর, সময় প্রভৃতি প্রাকৃতিক বিষয় পরিমাপযোগ্য, তাই এদের ভৌত রাশি বলা হয়। সুতরাং, সমস্ত প্রাকৃতিক বিষয়কে ভৌত রাশি বলা যায় না।

3. স্কেলার রাশি কাকে বলে? কয়েকটি স্কেলার রাশির উদাহরণ দাও ?

উত্তরঃ যে সমস্ত ভৌত রাশির শুধুমাত্র মান আছে কিন্তু অভিমুখ নেই তাদের স্কেলার রাশি বলা হয়।

 উদাহরণ: দৈর্ঘ্য, ভর, উন্নতা, কার্য প্রভৃতি হল স্কেলার রাশি।

4. ভেক্টর রাশি কাকে বলে? উদাহরণ দাও?

উত্তরঃ যে সমস্ত ভৌত রাশির মান ও অভিমুখ দুই ই আছে এবং যাদের যোগ ভেক্টর যোগের নিয়মানুযায়ী হয়, তাদের ভেক্টর রাশি বলা হয়।

 উদাহরণ; সরণ, বেগ, ত্বরণ, বল প্রভৃতি হল ভেক্টর রাশি।

5. স্কেলার ও ভেক্টর রাশির মধ্যে পার্থক্য লেখো?

উত্তরঃ  স্কেলার ও ভেক্টর রাশির মধ্যে পার্থক্য হল-

স্কেলার

ভেক্টর

1.
স্কেলার রাশির শুধুমাত্র মান আছে, অভিমুখ
নেই।

1.
ভেক্টর রাশির মান ও অভিমুখ দুই-ই আছে।

2.
সমজাতীয়
স্কেলার রাশির যোগ, সাধারণ বীজগাণিতিক নিয়মানুযায়ী হয়।

 

2.
সমজাতীয়
ভেক্টর রাশির যোগ, সাধারণ বীজগাণিতিক নিয়মানুযায়ী হয়  না।

3.
দুইটি স্কেলার রাশির গুণফল সর্বদা একটি স্কেলার
রাশি হয়।

 

3.
দুইটি ভেক্টর রাশির গুণফল একটি স্কেলার অথবা
ভেক্টর রাশি হতে পারে।

6. কোনো ভৌত রাশির মান ও অভিমুখ থাকলেই কি তাকে ভেক্টর রাশি বলা হয় ? 

অথবা, তড়িৎপ্রবাহের মান ও অভিমুখ দুই-ই আছে, কিন্তু তড়িৎপ্রবাহমাত্রা স্কেলার রাশি কেন?

উত্তরঃ  কোনো ভৌত রাশির মান ও অভিমুখ থাকলেই যে তাকে ভেক্টর রাশি বলা যাবে, তা নয়। 

যেমন—তড়িৎপ্রবাহ। তড়িৎপ্রবাহের মান ও অভিমুখ দুই-ই আছে, কিন্তু তড়িৎপ্রবাহের যোগ ভেক্টর যোগের নিয়মানুযায়ী হয় না। তাই তড়িৎপ্রবাহ ভেক্টর রাশি নয়, এটি স্কেলার রাশি।

7. ‘1’ kg পরিমাণ আলুর বাজারদর 20 টাকা’— এই বাক্যে আলু, আলুর পরিমাণ, এদের মধ্যে কোনটি ভৌত রাশি, কোনটিই বা নয়—কেন তা বুঝিয়ে লেখো।

উত্তরঃ  বাক্যটিতে আলুর ভর 1 kg, অর্থাৎ এটি পরিমাপযোগ্য রাশি। তাই আলুর ভর হল একটি ভৌত রাশি । আলু একটি পদার্থ, যা পরিমাপযোগ্য নয়। তাই এটি ভৌত রাশি নয়।

8. নিম্নলিখিত রাশিগুলির মধ্যে কোনটি স্কেলার ও কোটি ভেক্টর তা উল্লেখ করো : দৈর্ঘ্য, সময়, ভর, ওজন, বল, দ্রুতি, বেগ, ত্বরণ, ভরবেগ, কার্য, ক্ষমতা, চাপ, সরণ, কম্পাঙ্ক, ঘনত্ব।

উত্তরঃ  স্কেলার রাশি: দৈর্ঘ্য, সময়, ভর, দ্রুতি, কার্য, ক্ষমতা, চাপ, কম্পাঙ্ক, ঘনত্ব।

ভেক্টর রাশি : ওজন, বল, বেগ, ত্বরণ, ভরবেগ, সরণ।

9. একক কাকে বলে ?

উত্তরঃ  কোনো ভৌত রাশি পরিমাপ করার ক্ষেত্রে, ওই ভৌত রাশির একটি সুবিধাজনক ও নির্দিষ্ট মানকে প্রমাণ ধরে, তুলনামূলকভাবে ওই ভৌত রাশির পরিমাপ করা হয়। ওই নির্দিষ্ট মানকে পরিমাপের একক বলা হয় ৷

10. এককের প্রয়োজনীয়তা কী ?

উত্তরঃ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় পরিমাপ উল্লেখ করা আবশ্যক। সেইজন্য কোনো ভৌত রাশির পরিমাপের ক্ষেত্রে এককের প্রয়োজন। কোনো ভৌত রাশিকে প্রকাশ করা হয় সাংখ্যমান ও এককের সাহায্যে। একক ছাড়া পরিমাপ সম্ভব নয়। বিভিন্ন ভৌতরাশির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন বা ভৌত রাশি সম্পর্কিত সমীকরণের সঠিকতা যাচাই-এর জন্যও এককের প্রয়োজন।

11. নির্দিষ্ট রাশি পরিমাপের জন্য একটি নির্দিষ্ট একক থাকা প্রয়োজন—একথা তুমি সমর্থন কর কি না তা উদাহরণসহ বুঝিয়ে দাও ?

উত্তরঃ  হ্যাঁ, নির্দিষ্ট রাশি পরিমাপের জন্য অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট একক থাকা প্রয়োজন।

উদাহরণস্বরূপ, ভাবা যেতে পারে দৈর্ঘ্য পরিমাপের প্রসঙ্গ। দৈর্ঘ্যের কোনো নির্দিষ্ট একক না থাকলে যে-কোনো দুটি জায়গা, যেমন কলকাতা থেকে দিল্লির দূরত্ব, এক-একজনের পরিমাপে এক-এক রকম হত। কিন্তু তুলনীয় কোনো দূরত্ব বুঝতে আমাদের খুব একটা অসুবিধা হয় না। যেমন, যদি কারও কলকাতা থেকে বর্ধমানের দূরত্ব সম্বন্ধে মোটামুটি একটা ধারণা থাকে, তবে কলকাতা থেকে দিল্লির দূরত্ব সেই দূরত্বের তুলনায় কতগুণ, তা বলা হলে, কলকাতা থেকে দিল্লির দূরত্ব সম্বন্ধে একটা ধারণা জন্মায়। এক্ষেত্রে কলকাতা থেকে বর্ধমানের দূরত্ব হল একক দূরত্ব। এইভাবে যে-কোনো রাশির পরিমাপের ক্ষেত্রেই একটি একক থাকা প্রয়োজন।

12. প্রাথমিক বা মৌলিক বা মূল একক কাকে বলে? 

উত্তরঃ  যে সমস্ত ভৌত রাশির একক পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল নয়, অর্থাৎ স্বাধীনভাবে গঠন করা হয়েছে এবং যাদের সাহায্যে অন্যান্য ভৌত রাশির একক গঠন করা যায়, সেই সমস্ত ভৌত রাশির এককগুলিকে মৌলিক একক বলা হয়।

13. SI-তে প্রাথমিক এককগুলি কী কী ?

উত্তরঃ  SI-তে দৈর্ঘ্য, ভর, সময়, তাপমাত্রা, তড়িৎপ্রবাহ, দীপন প্রাবল্য ও পদার্থের পরিমাণ—এই ভৌত রাশিগুলির মূল বা প্রাথমিক এককগুলি যথাক্রমে মিটার, কিলোগ্রাম, সেকেন্ড, কেলভিন, অ্যাম্পিয়ার, ক্যান্ডেলা ও মোল।

Important Notes:

 SI-তে সাতটি মূল একক ছাড়াও সমতল কোণ (plane angle) ও ঘনকোণ (solid angle) এই দুটি ভৌত রাশির একককে সম্পূরক একক (supplementary units) হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। সমতল কোণের একক হল রেডিয়ান (rad) ও ঘনকোণের একক হল স্টেরেডিয়ান (sr)। কিন্তু 1995 খ্রিস্টাব্দে এই দুটি একককে সম্পূরক এককের শ্রেণি থেকে বাদ দিয়ে লম্ব এককের শ্রেণিভুক্ত করা হয়।

14. দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়ের একককে মৌলিক একক বলা হয় কেন ?

উত্তরঃ  দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়ের একক হল মৌলিক একক, কারণ— 

  1.  দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়ের একক পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল নয়, অর্থাৎ স্বাধীনভাবে গঠিত হয়।
  2. এই তিনটি ভৌত রাশির একককে বিশ্লেষণ করে সরলতর আকারে প্রকাশ করা যায় না।
  3. এই তিনটি ভৌত রাশির এককের সাহায্যে অন্যান্য ভৌত রাশির একক গঠন করা যায়।

 

15. লব্ধ একক কাকে বলে? উদাহরণসহ বুঝিয়ে দাও?

উত্তরঃ  যে সমস্ত ভৌত রাশির একক, এক বা একাধিক মূল এককের সাহায্যে গঠিত হয়, সেই সমস্ত ভৌত রাশির এককগুলিকে লব্ধ একক বলা হয়। যেমনবেগ, ত্বরণ, ভরবেগ, বল, কার্য প্রভৃতি রাশির একক হল লব্ধ একক

 উদাহরণ: বেগ হল কোনো বস্তুর সরণের হার। বেগের একক যে লম্ব একক তা নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে বোঝা যায়।

বেগ=সরণ/সময়

বেগের একক =(সরণের একক)/(সময়ের একক)=(দৈর্ঘ্যের একক)/(সময়ের একক)

 সুতরাং, বেগের একক দৈর্ঘ্য ও সময় এই দুটি মৌলিক এককের সাহায্যে গঠিত, তাই এটি লক্ষ একক।

16. নীচের রাশিগুলির মধ্যে কোনটির একক মৌলিক ও কোনটির একক লব্ধ তা উল্লেখ করো: ক্ষেত্রফল, আয়তন, সরণ, বেগ, ত্বরণ, বল, কার্য, শক্তি, ক্ষমতা, ভরবেগ, ভর, ওজন, উচ্চতা, ঘনত্ব, তরঙ্গদৈর্ঘ্য, পর্যায়কাল।

উত্তরঃ  মৌলিক এককবিশিষ্ট রাশি: সরণ, ভর, উচ্চতা, তরঙ্গদৈর্ঘ্য,পর্যায়কাল।

লম্ব এককবিশিষ্ট রাশি: ক্ষেত্রফল, আয়তন, বেগ, ত্বরণ, বল, কার্য, শক্তি, ক্ষমতা, ভরবেগ, ওজন, ঘনত্ব ।

17.  দুটি মৌলিক একক দ্বারা গঠিত একটি লম্ব এককের উদাহরণ দাও?

উত্তরঃ   দুটি মৌলিক একক দ্বারা গঠিত একটি লব্ধ একক হল দ্রুতির একক।

দ্রুতির একক = (অতিক্রান্ত দূরত্বের একক)/(সময়ের একক)=(দৈর্ঘ্যের একক /সময়ের একক)

 দ্রুতির একক হল দৈর্ঘ্য ও সময় এই দুটি মৌলিক রাশির এককের সাহায্যে গঠিত একটি লম্ব একক।

 

  1. জীবন ও তার বৈচিত্র- ক্লাস ৯ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর—–> Click here

  2. জীবন ও তার বৈচিত্র্য প্রশ্ন উত্তর ক্লাস ৯——-> Click Here

  3. 3.গ্রহরুপে পৃথিবী– CLASS 9 SHORT Question