Class 10 Short Question Life Science Chapter-1

Class 10 Life Science Chapter-1

Short Question Answer

  1. কে প্রথম প্রমাণ করেন যে, উদ্ভিদের প্রাণ আছে?

Ans. জগদীশচন্দ্র বসু।

  1. জগদীশচন্দ্র বসু কোন্ যন্ত্রের সাহায্যে উদ্ভিদের দেহে প্রাণের উপস্থিতি প্রমাণে সমর্থ হন?

**অথবা, কে ক্রেস্কোগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করেন ?

Ans. ক্রেস্কোগ্রাফ নামক যন্ত্রের সাহায্যে জগদীশচন্দ্র বসু উদ্ভিদের দেহে প্রাণের উপস্থিতি প্রমাণ করেন

  1. প্রাণীর মতো উদ্ভিদদেহে ‘রিফ্লেক্স আর্ক’-এর অস্তিত্ব প্রমাণ করতে জগদীশচন্দ্র বসু কোন্ যন্ত্র ব্যবহার করেন?

Ans.  রেজোন্যান্ট রেকোর্ডার (Resonant Recorder) নামক যন্ত্র ব্যবহার করেন।

  1. বিভিন্ন উদ্দীপনায় উদ্ভিদদেহে উৎপন্ন সাড়া লেখচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করতে কোন্ কোন্ যন্ত্র ব্যবহৃত হয়?

Ans. প্লান্টফাইটোগ্রাফ এবং ফ্রেস্কোগ্রাফ যন্ত্র ব্যবহৃত হয়।

       5 .  কোন্ গাছের পাতা স্পর্শ করা মাত্রই পত্রকগুলি বুজে যায় ?

Ans. লজ্জাবতী উদ্ভিদ।

  1. প্রখর সূর্যালোকে কোন্ ফুলের পাপড়িগুলি উন্মুক্ত হয়?

Ans. টিউলিপ ফুল।

  1. ফ্ল্যাজেলার সাহায্যে কোন প্রকার শৈবাল সূর্যের আলোর দিকে চলে যায়?

Ans . ক্ল্যামাইডোমোনাস।

       ৪. উদ্দীপক কী?

Ans.  বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ পরিবেশের যেসব পরিবর্তন জীবের দ্বারা শনাক্ত হয় ও জীবের সাড়াপ্রদানে সাহায্য              করে, তাদের উদ্দীপক বলে।

       9. উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা বলতে কী বোঝ?

Ans. বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের প্রভাবে জীবের সাড়াপ্রদানের ক্ষমতাকে সংবেদনশীলতা বলে।

      10 . উদ্দীপক কত প্রকার ও কী কী?

Ans. উদ্দীপক দুই প্রকার। যথা—বাহ্যিক উদ্দীপক এবং অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক ।

  1. কয়েকটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের উদাহরণ দাও।

Ans. অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক হরমোন, ক্যালশিয়াম আয়ন (Ca2+)।

  1. কয়েকটি বাহ্যিক উদ্দীপকের উদাহরণ দাও। *

Ans. বাহ্যিক উদ্দীপক : আলো, উয়তা, অভিকর্ষ বল।

  1. উদ্ভিদের সাড়াপ্রদানের একটি মাধ্যম কী ?

Ans. চলন।

  1. উদ্ভিদ কীভাবে পরিবেশের পরিবর্তনে সাড়া দেয়?

Ans. উদ্ভিদ ধীর বৃদ্ধিজ চলন বা রসস্ফীতিজনিত চলনের মাধ্যমে সাড়া দেয়।

  1. লজ্জাবতী বা বনচাড়ালের পত্রকের চলন কোন্ কোশের রসস্ফীতির তারতম্যের জন্য ঘটে থাকে?

Ans. উপাধান কোশের রসস্ফীতির তারতম্যের জন্য বনচাড়াল বা লজ্জাবতীর পত্রকের চলন ঘটে।

  1. নির্দিষ্ট স্থানে আবদ্ধ থেকে (বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ) উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্ভিদের অঙ্গপ্রতঙ্গ সঞ্চালনের পদ্ধতিকে কী বলে?

Ans.  নির্দিষ্ট স্থানে আবদ্ধ থেকে উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্ভিদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের পদ্ধতিকে চলন বলে।

  1. উদ্দীপকের প্রকৃতি অনুযায়ী উদ্ভিদের চলন কত প্রকার ও কী কী ?

Ans.  উদ্দীপকের প্রকৃতি অনুযায়ী উদ্ভিদের চলন প্রধানত দু-প্রকার। যথা—স্বতঃস্ফূর্ত চলন ও আবিষ্ট চলন।

  1. স্বতঃস্ফূর্ত চলন কী ধরনের উদ্দীপকের প্রভাবে ঘটে?

Ans. বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের প্রভাবে স্বতঃস্ফূর্ত চলন ঘটে।

  1. আবিষ্ট চলন কী ধরনের উদ্দীপকের প্রভাবে ঘটে?

Ans. আলো, তাপ প্রভৃতি বাহ্যিক উদ্দীপকের প্রভাবে আবিষ্ট চলন ঘটে।

  1. উয়তার তীব্রতা দ্বারা উদ্ভিদের ফুল ফোটা কী জাতীয় চলন?

Ans. থার্মোন্যাস্টিক চলন।

  1. অনুকূল জলবৃত্তিজ চলন কোথায় দেখা যায় ?

Ans. উদ্ভিদের মূলে।

  1. কোন্ উদ্ভিদের মূলে প্রতিকূল অভিকর্ষবর্তী চলন দেখা যায় ?

অথবা, কোন্ উদ্ভিদের মূল অভিকর্ষের বিপরীত দিকে বৃদ্ধি পায়?

Ans.  লবণাম্বু উদ্ভিদের শ্বাসমূল।

  1. পত্ররন্দ্রের খোলা বা বন্ধ হওয়ার কোন প্রকারের চলন ?

Ans. ফোটোন্যাস্টিক চলন।

  1. উদ্ভিদের একটি আলোক তির্যকবর্তী অঙ্গের নাম লেখো।

Ans. পাতা।

  1. ‘বটের ঝুরি সোজা মাটির দিকে যায়’—এটা কী প্রকার চলন?

Ans. অনুকূল অভিকর্ষবর্তী চলন।

  1. সিসমোন্যাস্টিক চলনে কোটি উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে?

Ans. স্পর্শ ও আঘাত ।

  1.  প্রকরণ চলন কী কারণে ঘটে?

Ans. কোশের রসস্ফীতির তারতম্যের কারণে প্রকরণ চলন ঘটে।

28 . উদ্ভিদের মূলে কী জাতীয় অভিকর্ষবৃত্তি চলন দেখা যায়?

Ans.  অনুকূল অভিকর্ষবৃত্তি।

  1. ফটোন্যাস্টিক চলন কীসের প্রভাবে ঘটে?

Ans. আলোর তীব্রতা।

  1. উদ্ভিদের ফটোট্যাকটিক চলনের দুটি উদাহরণ দাও।

Ans. আলোক উৎসের দিকে ক্ল্যামাইডোমোনাস ও ভলভক্স চলন।

  1. ন্যাস্টিক চলন বা ব্যাপ্তি চলনের একটি উদাহরণ দাও।

Ans.  পদ্মফুলের পাপড়ি তীব্র আলোকে খুলে যায়, আবার কম আলোকে মুদে যায়। এটি একপ্রকারের ফটোন্যাস্টিক বা আলোক ব্যাপ্তিচলন।

  1. হেলিওট্রপিজম কী? *

Ans.  ফোটোট্রপিক চলনে আলোর উৎস সূর্য বলে ফটোট্রপিক চলনকে হেলিএট্রপিজম (হেলিও কথার অর্থ সূর্য) বলে।

  1. জৈবিক চলন বলতে কী বোঝ?

Ans. উদ্ভিদকোশের প্রোটোপ্লাজমের সক্রিয়তার দ্বারা সংঘটিত চলনকে জৈবিক চলন বলে।

  1. গমনে সক্ষম একটি ছত্রাকের নাম লেখো।

Ans. গমনে সক্ষম ছত্রাক হল মিক্সোমাইসিটিস।

  1. কোন প্রকার বক্রচলনে উদ্দীপক প্রয়োজন হয়?

Ans আবিষ্ট বক্রচলনে।

  1. আবিষ্ট বচলন কত প্রকার ও কী কী ?

Ans. আবিষ্ট চলন দুই প্রকার। যথা— ট্রপিক চলন ও ন্যাস্টিক চলন।

  1. পরাগমিলনের পর পরাগনালিকা ডিম্বাণুর দিকে থাকে—এটি কী ধরনের চলন?

Ans. এটি একপ্রকার কেমোট্রপিক চলন।

  1. কোনো রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে উদ্ভিদ অঙ্গের ন্যাস্টিক চলনকে কী বলে?

Ans.  কেমোন্যাস্টিক চলন

  1. একটি স্পর্শ যাপ্তি (সিসমোন্যাস্টি) চলনের উদাহরণ দাও।

Ans. স্পর্শ করলে লজ্জাবতীসহ কিছু উদ্ভিদের পাতা বুজে যায়- এটি সিসমোন্যাস্টিক চলন

  1. কী কারণে ফুল ফোটা ও ফোটা ফুল বন্ধ হয়?

Ans. ফুল ফোটা বা ফোটা ফুল বন্ধ হওয়া পুষ্পপত্রের কোশের রসস্ফীতির চাপের পার্থক্যের জন্য ঘটে।

  1. সংবেদনশীলতার একটি উদাহরণ দাও।

Ans লজ্জাবতী লতার পাতাকে স্পর্শ করলে পত্রকগুলি নুইয়ে পড়ে। এটি একপ্রকার সংবেদনশীলতা।

  1. কাণ্ডে কী কী প্রকারের ট্রপিক চলন দেখা যায়?

Ans. আলোক অনুকূলবর্তী, অভিকর্ষ প্রতিকূলবর্তী ও জল প্রতিকূলবর্তী ট্রপিক চলন দেখা যায়।

  1. একটি আলোক বির্তী উদ্ভিদ অঙ্গের নাম লেখো।

Ans. সমাঙ্ক পৃষ্ঠ পাতা।

  1. ফটোন্যাস্টিক চলনের একটি উদাহরণ দাও।

Ans. আলোর তীব্রতার ফলে সূর্যমুখীর দিক পরিবর্তন হয়। এটি একপ্রকার ফটোন্যাস্টিক চলন।

  1. মূলে কী কী প্রকারের ট্রপিক চলন দেখা যায়?

Ans. মূলে জল অনুকূলবর্তী, অভিকর্ষ অনুকূলবর্তী ও আলোক প্রতিকূলবর্তী ট্রপিক চলন দেখা যায়।

  1. শ্বাসমূলে কী কী প্রকারের ট্রপিক চলন দেখা যায়?

Ans. শ্বাসমূলে আলোক অনুকূলবর্তী, অভিকর্ষ প্রতিকূলবর্তী ও জল প্রতিকূলবর্তী ট্রপিক চলন দেখা যায়।

  1. উদ্ভিদের বিটপ সর্বদা অভিকর্ষ বলের বিপরীত দিকে বৃদ্ধি পায়—এটি কী জাতীয় চলন?

Ans.  প্রতিকূল অভিকর্ষবর্তী চলন।

  1. কেমোন্যাস্টিক চলন দেখা যায় এমন একটি উদ্ভিদের নাম লেখো।

Ans. পতঙ্গভুক উদ্ভিদ, যেমন—সূর্যশিশির।

  1. উদ্ভিদের শাখাপ্রশাখা সূর্যালোকের পায়—এটা কী জাতীয় চলন?

Ans.  অনুকূল আলোকবর্তী চলন বা পজিটিভ ফটোট্রপিক চলন।

  1. কোন্ প্রকার চলনে সমগ্র উদ্ভিদদেহের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন ঘটে?

Ans. ট্যাকটিক চলনে।

  1. ট্যাকটিক চলন দেখা যায় এমন একটি উদ্ভিদের নাম লেখো।

Ans. ক্ল্যামাইডোমোনাস/ভলভক্স নামক উদ্ভিদে ফোটোট্যাকটিক চলন দেখা যায়।

  1. মাটিতে আবদ্ধ উদ্ভিদ উদ্দীপকের প্রভাবে বা উদ্দীপক ছাড়াই নানাভাবে বেঁকে যায়, একে কী প্রকার চলন বলে?

Ans. বক্র চলন।

  1. যান্ত্রিক চলন বলতে কী বোঝ?

Ans. উদ্ভিদ অঙ্গের চলন ভৌত পদ্ধতিতে (ইমাবাইবিশন) হলে, তাকে যান্ত্রিক চলন বলে।

  1. বনচাড়ালের পাতার পার্শ্বপত্রকের চলন কী ধরনের চলনের উদাহরণ ?

Ans. প্রকরণ চলন।

  1. পতঙ্গভুক উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পতঙ্গদেহের প্রোটিনের সংস্পর্শে পত্রফাদের কর্ষিকাগুলিতে কী ধরনের চলন দেখা যায় ?

Ans. কেমোন্যাস্টিক চলন।

  1. উদ্ভিদের মূল জলের উৎসের দিকে অগ্রসর হয়, এটি কী প্রকার চলন?

Ans. হাইড্রোট্রপিক চলন ।

  1. উদ্ভিদের বিটপ বা কাণ্ডের শাখাপ্রশাখা আলোর উৎসের দিকে অগ্রসর হয়, এটি কী প্রকারের চলন?

Ans. ফটোট্রপিক চলন ।

  1. জগদীশচন্দ্র বসু-র লেখা একটি বই-এর নাম।

Ans. The Nervous Mechanism of Plants.

  1. স্বপ্ন সূর্যালোকে ফোটে এমন দুটি ফুলের নাম লেখো।

Ans. বেল, হাসনুহানা।

  1. পরাগনালিকার ডিম্বকের দিকের চলন কী প্রকার চলন?

Ans. কেমোট্রপিক চলন ।

  1. মসের শুক্রাণুর, ডিম্বাণুর দিকে চলন কী প্রকারের চলন?

Ans. এটি একপ্রকারের কেমোট্যাকটিক চলন।

YOU ALSO MAY LIKE THIS POST:

  1. জীবন ও তার বৈচিত্র- ক্লাস ৯ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর—–> Click here
  2. জীবন ও তার বৈচিত্র্য প্রশ্ন উত্তর ক্লাস ৯——->Click Here
  3. গ্রহরুপে পৃথিবী- CLASS 9 SHORT Question
  4. পরিমাপ- ক্লাস ৯ প্রশ্ন উত্তর | Measure Class 9 Question Answer
  5. জীববিদ্যা ও তার শাখাসমূহ – Class 9
  6. পরিমাপ- ক্লাস ৯ প্রশ্ন উত্তর | Measure Class 9 Question Answer
  7. পরিমাপ Question Answer Class 9
  8. Class 9 Geography Chapter 1 MCQ of Graharupa Prithibi
  9. গ্রহরুপে পৃথিবী -Class 9 Question Answer

 

 

 

 

Chepter 1- নদীর বিভিন্ন কাজ দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ

Class 10 Geography Chepter 1- নদীর বিভিন্ন কাজ দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ;

বহুবিকল্পভিত্তিক উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো:

  • পৃথিবীর বৃহত্তম নদী অববাহিকা হল

Ans: আমাজন

  • পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী

Ans: নীল

  • পৃথিবীর উচ্চতম জলপ্রপাতটি হল—

Ans: সাল্টো এঞ্জেল

  • পৃথিবীর গভীরতম ক্যানিয়ন—

Ans: গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন

  • ভারতের উচ্চতম জলপ্রপাত

Ans: যোগ

  • নিউ মুর দ্বীপটি যে নদীর মোহানায় অবস্থিত-

Ans: হাড়িয়াভাঙা

  • পৃথিবীর বৃহত্তম নদীগঠিত দ্বীপ—

Ans: ইলহা দ্য মারাজো

  • অপেক্ষাকৃত কম ঢালযুক্ত  ছোটো ছোটো জলপ্রপাতকে বলে

Ans: র‍্যাপিড

  • একটি কাসপেট বদ্বীপের উদাহরণ

Ans:- তাইবার নদীর বদ্বীপ

  1. পলল শঙ্কু বা পলল ব্যজনী গড়ে ওঠে নদীর—

Ans: পর্বতের পাদদেশে

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো:

  • নদীর উৎস অঞ্চলের অববাহিকাকে ধারণ অববাহিকা বলে।
  • নদীর আঁকাবাঁকা গতিপথকে মিয়েন্ডার বলে।
  • নদী মোহানা খুব প্রশস্ত হলে তাকে খাঁড়ি বলে।
  • গাঙ্গেয় বদ্বীপের আকৃতি ধনুকের মতো
  • সেন্ট লরেন্স নদীর গতিপথে বিখ্যাত জলপ্রপাতটি হল – নায়াগ্রা.
  • আমাজন নদী পৃথিবীর সর্বাধিক জল বহন করে।
  • জলপ্রপাতের নীচে সৃষ্ট গর্তকেপ্লাঞ্জপুল বলা  হয়।
  • নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ইংরেজি ‘V’ আকৃতির উপত্যকাকে – গিরিখাত বলে।
  • নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ইংরেজি  ‘I’ আকৃতির উপত্যকাকে ক্যানিয়ন  বলে।
  • মাজুলি– ভারতের বৃহত্তম নদীগঠিত চড় বা দ্বীপ।

স্তম্ভ মেলাও:

বামস্তম্ভডানস্তম্ভ
পক্ষীপাদ বদ্বীপতাইবার
কাসপেট বদ্বীপনীল
খাঁড়িয় বদ্বীপমিসিসিপি
ধনুকাকৃতির বদ্বীপকাস্পিয়ান সাগর
হ্রদ বদ্বীপওব

Answer: 1=C, 2=A , 3=E , 4= B,  5= D

দু-এক কথায় উত্তর দাও:

  1.  পৃথিবীর সুদৃশ্যতম জলপ্রপাতের নাম কী?

উত্তর: নায়াগ্রা।

  •  পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ কোন্‌টি?

উত্তর: গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ।

  •  একটি পাখির পায়ের মতো বদ্বীপের নাম করো?

উত্তর: মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ।

  •  একটি ধনুকাকৃতির বদ্বীপের নাম করো?

উত্তর: নীলনদের বদ্বীপ।

  •  একটি আদর্শ নদীর উদাহরণ দাও।

উত্তর: গঙ্গা।

  •  দুটি নদী অববাহিকার মধ্যবর্তী উচ্চভূমিকে কী বলে?

উত্তর: জলবিভাজিকা।

  •  দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূভাগকে কী বলে?

উত্তর: দোয়াব।

  •   নদীর জলের উচ্চতার হ্রাসবৃদ্ধিকে কী বলে?

উত্তর: নদীবর্তন।

  •  কোন্ নদীর মোহানায় পৃথিবীর দীর্ঘতম খাঁড়ি দেখা যায়?

উত্তর: ওব নদীর মোহানায়।

  1.  নদীর ক্ষয়কার্যের শেষসীমা কী?

উত্তর: সমুদ্রপৃষ্ঠ।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

  1. গিরিখাত কী?

উত্তর: উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল খুব বেশি ই থাকে বলে নদী প্রবলবেগে নীচে থামতে থাকে এবং ক্ষয় ক্ষমতাও অধিক হয়। এইসময় নদীর প্রবল স্রোতের আঘাতে অধিক নিম্নক্ষয় ও সামান্য পার্শ্বক্ষয়ের দ্বারা নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও গভীর হয় এবং ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতো গভীর খাতের সৃষ্টি হয়। একে গিরিখাত বা গিরিসংকট বলে। পেরু রাষ্ট্রের কল্কা নদীর এল ক্যানন দ্য কলকা পৃথিবীর গভীরতম গিরিখাত।

  • ক্যানিয়ন কী?

উত্তর: শুষ্ক মরুভূমি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের অভাবে নদীর পার্শ্বক্ষয় একেবারেই হয় না বলে শুধুমাত্র নিম্নক্ষয়ের দ্বারা শিলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলি আরও গভীর ও সংকীর্ণ উপত্যকার সৃষ্টি করে। এই ইংরেজি “I” অক্ষরের মতো গভীর গিরিখাতকে এবং ক্যানিয়ন বলে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বল নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবীর বৃহত্তম ক্যানিয়ন।

  •  পলল শঙ্কু কী?

উত্তর: উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল থেকে নদী যখন সমভূমিতে নেমে আসে তখন ভূমির ঢাল হঠাৎ কমে যায় এবং নদীর বহনক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে পর্বতের পাদদেশ নদীবাহিত নানা আকৃতির নুড়ি, বালি, কাদা প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে যে ত্রিকোণাকার হাতপাখার মতো ভূভাগ গঠন করে, তাকে পলল ন্য শঙ্কু বা পলল পাখা বলে ।

  •  মন্থকূপ কী?
  •  মিয়েন্ডার কি?

 উত্তর: নদী যখন সমভূমি অঞ্চলে প্রবেশ করে তখন ভূমির ঢাল কম বলে নদীর স্রোতের বেগ কমে যায়। তখন নদীর গতিপথে কোনো বাধা বা কঠিন শিলাস্তর অবস্থান করলে তাকে এড়িয়ে নদী আঁকাবাঁকা পথে অতি মন্থর গতিতে প্রবাহিত হয়। সমভূমি প্রবাহে নদীর এই আঁকাবাঁকা গতিপথকে নদী বাঁক বা মিয়েন্ডার (তুরস্কের মিয়েন্ড্রাস নদীর নামানুসারে) বলে।

  • . খাঁড়ি কী?

উত্তরঃ  নদী মোহানা খুব প্রশস্ত বা ফানেলাকৃতির হলে, তাকে খাঁড়ি বলে। সাধারণত নদী মোহানায় বিপরীত দিক থেকে আসা প্রবল জোয়ারের লবণাক্ত জল নদীতে ঢুকে পড়ে এবং সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে ফানেলাকৃতির যে নালা বা নদীখাতের সৃষ্টি করে, তাকে খাঁড়ি বলে। ওব নদীর মোহানায় গঠিত খাঁড়িটি পৃথিবীর দীর্ঘতম খাঁড়ি।

  •   প্লাবনভূমি কী?

উত্তর: বর্ষাকালে নদীর জল বেড়ে যায় ও দু’কূল ছাপিয়ে বন্যার সৃষ্টি করে। নদী উপত্যকার নীচু জমিতে বন্যার জল ঢুকে পড়ে ও পরে বন্যার জল সরে গেলে সেখানে নদীবাহিত পলি পড়ে থাকে। এভাবে বন্যার ফলে বছরের পর বছর পলি সঞ্চিত হয়ে যে নতুন ভূভাগ গঠন করে, তাকে প্লাবনভূমি বলে।

  • স্বাভাবিক বাঁধ বলতে কী বোঝ?

 উত্তর: নদীর নিম্নগতিপথে দুই তীর বরাবর নদীবাহিত পলি ক্রমাগত সঞ্চিত হয়ে যে অনেকটা উঁচু বাঁধের মতো ভূমিরূপ গঠন করে, স্বাভাবিক বাঁধ বা লেভি বলা হয়।

  •  নদীমঞ্চ কী?

উত্তর: নদী যখন ঊর্ধ্বগতিপথের শেষভাগে এবং মধ্যগতিপথের প্রথমভাগে প্রবেশ করে তখন নদীর গতিবেগ কমে যায়। এই স্থানে নদীবাহিত নুড়ি, বালি, কাঁকড় প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে, অসমান ধাপের সৃষ্টি করে, নদী উপত্যকায় গঠিত এ ধরনের বিস্তীর্ণ সিঁড়ির মতো ধাপকে নদীমঞ্চ বলে।

  •  অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: নিম্নপ্রবাহে দুটি নদীবাঁক পরস্পরের নিকটবর্তী হলে নদী পুরোনো খাত ছেড়ে নতুন খাতে প্রবাহিত হয়। পুরোনো খাতটি ঘোড়ার ক্ষুরের মতো দেখতে হয় বলে একে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বলে।

  • নদীগ্রাস কী?

উত্তর: কোনো জলবিভাজিকার দুই ঢাল থেকে উৎপন্ন পরবর্তী নদী দু’পাশের অনুগামী নদীতে এসে মিলিত হলে যে পরবর্তী নদীটি বেশি শক্তিশালী সেটি মস্তকের দিকে দ্রুত ক্ষয় করে। এইভাবে জলবিভাজিকার অন্যদিকে অবস্থিত অপেক্ষাকৃত দুর্বল পরবর্তী নদীর মধ্য দিয়ে অন্য অনুগামী নদীটিকে যখন শক্তিশালী নদীটি অধিগ্রহণ বা গ্রাস করে, তাকে নদীগ্রাস বলে।

  •  নিক পয়েন্ট কী?

উত্তর: ভূ-আলোড়নের ফলে নদীপথের উত্থান হয়ে অথবা সমুদ্র দূরে সরে যাওয়ায় নদীর পুনর্যৌবন লাভ ঘটে। এক্ষেত্রে নদী পুনরায় একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ গতিপথ সৃষ্টির জন্য একটি নতুন নদীখাতের সৃষ্টি করে। নদীর এই নতুন খাতটি যেখানে পুরোনো নদীখাতের সঙ্গে মিলিত হয়, অর্থাৎ যে বিন্দুতে পুরোনো ও নতুন ঢালের সংযোগ ঘটে, সেই বিন্দুকে নিক বিন্দু বা নিক পয়েন্ট বলে। ভূপ্রকৃতিগত পার্থক্যের কারণে এই স্থানে জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়।

  •  আদর্শ নদী কাকে বলে?

উত্তর: সাধারণত যে নদীর ঊর্ধ্ব বা পার্বত্য প্রবাহ, মধ্য বা সমভূমি প্রবাহ ও নিম্ন বা বদ্বীপ প্রবাহ—এই তিনটি প্রবাহই সুস্পষ্টভাবে দেখা যায় তাকে আদর্শ নদী বলে। যেমন: ভারতের গঙ্গা একটি আদর্শ নদীর উদাহরণ।

  •  ষষ্ঠঘাতের সূত্র কী?

উত্তর: নদীর গতিবেগ বৃদ্ধিজনিত কারণে নদীর বহনক্ষমতা সেই অনুপাতে বেড়ে যায়। সাধারণভাবে নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেলে তার বহনক্ষমতা 26 গুণ অর্থাৎ 64 গুণ বেড়ে যায়। নদীর গতিবেগ ও বহনক্ষমতা বৃদ্ধির এই সূত্রকে ষষ্ঠঘাতের সূত্র বলা হয়।

  •  জলবিভাজিকা বলতে কী বোঝ?

উত্তর: পাশাপাশি অবস্থিত দুটি নদী অববাহিকাকে যে উচ্চভূমি পৃথক করে রাখে, তাকে জলবিভাজিকা বলে। সাধারণত ভূপৃষ্ঠের পর্বত ও মালভূমিগুলি জলবিভাজিকা হিসেবে ভূপৃষ্ঠে বিরাজ করে। যেমন—এশিয়া মহাদেশের মধ্যভাগের উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল বা উচ্চভূমি পৃথিবীর বৃহত্তম জলবিভাজিকা।

  •  ধারণ অববাহিকা কাকে বলে?

উত্তর: নদীর উৎস অঞ্চলের অববাহিকাকে ধারণ অববাহিকা বলে উৎস অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বিভিন্ন জলধারা যখন প্রধান নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে মূল নদীর জলধারা বৃদ্ধি করে, তখন নদীর সেই উৎস অঞ্চলের অববাহিকাকে ধারণ অববাহিকা বলে। এটি সাধারণত নদীর ঊর্ধ্ব প্রবাহে দেখা যায়।

  •  নদী অববাহিকা কাকে বলে?

উত্তর: সাধারণত প্রধান নদী তার উপনদী ও শাখানদী নিয়ে যে অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, সেই অঞ্চলকে নদী অববাহিকা বলে। এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত অন্যান্য উপনদী ও শাখানদীর বাহিত জল, ওই নির্দিষ্ট অঞ্চলের ধুয়ে আসা জল এবং বৃষ্টি ও বরফগলা জল বহন করে যে অঞ্চল, সেই অঞ্চলকে নদী অববাহিকা বলে। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদী অববাহিকা হল পৃথিবীর বৃহত্তম নদী অববাহিকা।

পর্যায়িত নদী কী?

উত্তর: নদী তার গতিপথে ক্ষয়, বহন অবক্ষেপণ কাজের মাধ্যমে সবরকমের অসঙ্গতি দূর করে শেষ পর্যন্ত পরিণত পর্যায়ে একটি সঙ্গতি বা সামঞ্জস্যপূর্ণ ঢাল সৃষ্টি করে। নদীর এই ঢালকে পর্যায়িত ঢাল এবং এই ঢালে প্রবাহিত নদীকে পর্যায়িত নদী বলে।

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

  1.  গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
গিরিখাতক্যানিয়ন
উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল খুব বেশি ই থাকে বলে নদী প্রবলবেগে নীচে থামতে থাকে এবং ক্ষয় ক্ষমতাও অধিক হয়। এইসময় নদীর প্রবল স্রোতের আঘাতে অধিক নিম্নক্ষয় ও সামান্য পার্শ্বক্ষয়ের দ্বারা নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও গভীর হয় এবং ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতো গভীর খাতের সৃষ্টি হয়। একে গিরিখাত বা গিরিসংকট বলে।  শুষ্ক মরুভূমি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের অভাবে নদীর পার্শ্বক্ষয় একেবারেই হয় না বলে শুধুমাত্র নিম্নক্ষয়ের দ্বারা শিলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলি আরও গভীর ও সংকীর্ণ উপত্যকার সৃষ্টি করে। এই ইংরেজি “I” অক্ষরের মতো গভীর গিরিখাতকে এবং ক্যানিয়ন বলে।
পেরু রাষ্ট্রের কল্কা নদীর এল ক্যানন দ্য কলকা পৃথিবীর গভীরতম গিরিখাতআমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বল নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবীর বৃহত্তম ক্যানিয়ন।
  • মন্থকূপ ও প্রপাতকূপের মধ্যে পার্থক্য লেখো?
পার্থক্যের বিষয়মন্থকূপপ্রপাতকূপ
ধারণানদীর পার্বত্য প্রবাহে নদীখাতের তলদেশে বর্তুলাকৃতির যে গর্তের সৃষ্টি হয়, তাকে মন্থকূপ বা পটহোল বলে।জলপ্রপাতের তলদেশে যেখানে জলস্রোতের সঙ্গে প্রস্তরখণ্ড প্রবল বেগে এসে পড়ে সেখানে প্রচণ্ড আঘাতে বিশালাকার হাঁড়ির মতো দেখতে গর্তের সৃষ্টি হয়, যেগুলিকে প্রপাতকূপ বা প্লাঞ্জপুল বলে।
সৃষ্টির প্রক্রিয়ানদীর অবঘর্ষণ ও বুদবুদজনিত ক্ষয়।প্রবল জলস্রোতের সঙ্গে প্রস্তরখণ্ডের ক্রমাগত আঘাত।
উদাহরণগঙ্গানদীর উচ্চপ্রবাহে দেখা যায়।ভারতের হুডু জলপ্রপাতের পাদদেশে দেখা যায়।
  • জলপ্রপাত ও খরস্রোতের মধ্যে পার্থক্য লেখো ?
পার্থক্যের বিষয়জলপ্রপাতখরস্রোত
ধারণানদীর পার্বত্য প্রবাহে ঢালের তারতম্যের কারণে নদীর জলরাশি ওপর থেকে নীচে সবেগে আছড়ে পড়লে, তাকে জলপ্রপাত বলেনদীর পার্বত্য প্রবাহে যেসব অসংখ্য ছোটো ছোটো জলপ্রপাত গঠিত হয়, তাদের খরস্রোত বলে
অবস্থাননদীর পার্বত্য প্রবাহে শিলাস্তরের আড়াআড়ি বা উল্লম্ব অবস্থান, চ্যুতিতল, পুনর্যৌবন লাভের ফলে  সৃষ্ট নিক পয়েন্ট, ঝুলন্ত উপত্যকার প্রান্তভাগের খাড়া ঢাল ও মালভূমির খাড়া ঢাল বরাবর অংশে জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়।নদীর পার্বত্য প্রবাহে প্রায় সর্বত্রই খরস্রোতের সৃষ্টি হয়।
উদাহরণকারাও নদীর সাল্টো এঞ্জেল।আফ্রিকার জাইর নদীর খরস্রোত
  • জলপ্রপাত সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: বিভিন্ন কারণে জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়।

 যেমন:

 [1) শিলাস্তরের বিন্যাস ও চ্যুতিতল বরাবর : নদীর গতিপথে কঠিন শিলা ও কোমল শিলা পরস্পর উল্লম্বভাবে বা আড়াআড়িভাবে অবস্থান করলে অসম ক্ষয়কার্যের ফলে উৎপন্ন খাড়া ঢাল বরাবর জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও ভূ-আলোড়নের ফলে নদীর গতিপথে খাড়া ঢাল বা চ্যুতিতলের সৃষ্টি হলেও জলপ্রপাত গঠিত হয়।

[2] নিক পয়েন্ট: ভূমির পুনর্যৌবন লাভের ফলে নদীর গতিপথে পুরোনো নদীখাত ও নতুন খাতের মিলনস্থলে যে খাঁজ বা নিক পয়েন্ট গড়ে ওঠে, সেই স্থানেও জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়।

[3] বুলিন্ত উপত্যকা : পার্বত্য হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ঝুলন্ত উপত্যকার প্রান্তভাগের খাড়া ঢালে।

  • জলপ্রপাত ক্রমশ উৎসের দিকে সরে যায় কেন?

উত্তর:  জলপ্রপাত ক্রমশ উৎসের দিকে সরে যায় বা পশ্চাদপসারণ করে, কারণ –

[1] নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলার অবস্থানগত তারতম্যের কারণে অসম ক্ষয়কার্য হয়। এর ফলে কঠিন শিলা অপেক্ষা কোমল শিলাস্তর দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং এর ফলে জলপ্রপাত ক্রমশ পিছনদিক বা মস্তকের দিকে সরে যায়।

[2] এ ছাড়াও, নদীর দৈর্ঘ্য বরাবর পুরাতন ও নতুন ঢালের সংযোগ বিন্দুতে সৃষ্ট নিক বিন্দু বা নিক পয়েন্টে নদীর ক্ষয় দ্রুত হতে থাকে। নদী তার ঢালকে নদীক্ষয়ের নতুন শেষ সীমা অনুযায়ী মসৃণ করার জন্য মোহানা থেকে ক্রমশ ঊর্ধ্বপ্রবাহের দিকে ক্ষয় করতে শুরু করে। এর ফলে নিক বিন্দুতে সৃষ্ট প্রপাতটি ক্রমশ পিছনদিকে বা উৎসের দিকে সরে যায়।

[3] নদীর পুনর্যৌবনলাভের কারণে নদীর ঢালের যে পরিবর্তন ঘটে, তার ফলে ক্রমশ জলপ্রপাতের পশ্চাদপসরণ ঘটে।

  • বিভিন্ন প্রকার জলপ্রপাতের প্রেণিবিভাগ করো।

উত্তর: ভূপৃষ্ঠের যাবতীয় জলপ্রপাতকে নিম্নলিখিত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

(1) র‍্যাপিড: অল্প উচ্চতাযুক্ত অসম ঢালে সৃষ্ট জলপ্রপাত হল র‍্যাপিড। যেমন সুবর্ণরেখা নদীর হুজু জলপ্রপাত।

[2] কাসকেড : একাধিক ধাপ ও ধারায় জলপ্রপাতের জল নীচের দিকে পতিত হলে, তাকে কাসকেড বলে। যেমন সুবর্ণরেখা নদীর জোহা জলপ্রপাত।

[3] ক্যাটার‍্যাক্টঃ  অধিক উচ্চতা থেকে প্রবল ও ভয়ঙ্কর জলরাশি উত্তাল গতিতে নেমে এলে, তাকে ক্যাটারাক্ট বলে। যেমন—সাল্টো এঞ্জেল জলপ্রপাত।

  • অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বদ্বীপ অঞ্চলে দেখা যায় কেন?

উত্তরঃ বদ্বীপ অঞ্চলে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের সৃষ্টি হয়, কারণ—

[1] ভূমির ঢাল অত্যন্ত কমে যাওয়ায় নদী এখানে অত্যন্ত সর্পিল বা আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয়।

[2] ক্রমাগত জলস্রোতের ধাক্কায় অবতল অংশ ক্ষয় হয় এবং এভাবে নদীর বাঁক ক্রমশ বাড়তে থাকলে বাঁকের মাঝের অংশটি সংকীর্ণ হয়। নদীর উত্তল অংশে পলি সঞ্চয়ের ফলে নদীর বাঁকের মাঝের সামান্য ব্যবধান লুপ্ত হয়ে নদী থেকে বাঁকা অংশটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

[3] বেশি বাঁকযুক্ত স্থানের পরিবর্তে নদী নতুন ও সোজা পথে প্রবাহিত হয় এবং বিচ্ছিন্ন ও পরিত্যক্ত নদী বাঁকের অগ্রভাগে পলি, কাদা, সঞ্চিত হয়ে খাতের মুখটি বন্ধ হয়ে গেলে জল আবদ্ধ হয়ে অশ্বের ক্ষুরের মতো হ্রদের সৃষ্টি করে।

  • সব নদীতে বদ্বীপ গড়ে ওঠে না কেন?

উত্তর: সব নদীতে বদ্বীপ গড়ে ওঠে না। কারণ –

[1] স নদী দীর্ঘ হয় না, তাদের উপনদীর সংখ্যা কম থাকে ও তাদের মধ্য ও নিম্নপ্রবাহ অনতিদীর্ঘ হয়।

[2] মোহানার কাছে প্রবল সমুদ্র স্রোত থাকলে, সমুদ্র গভীর ও উন্মুক্ত এবং সমুদ্রে জোয়ারভাটার প্রকোপ বেশি হলে বদ্বীপ গড়ে ওঠে না।

[3] এ ছাড়া যেসব নদীতে বায়ুপ্রবাহ নদীস্রোতের দিকে চালিত হয় ও নদীতে ক্ষয়কার্য কম হয় সেখানে নদীতে পলির অভাব হয়, ফলে মোহানায় পলি সঞ্চয় কম হয় এবং বদ্বীপ গড়ে ওঠে না।

  • নদী কী কী প্রক্রিয়ায় ক্ষয়কার্য করে?

উত্তর:  নদী প্রধানত পাঁচটি পদ্ধতির মাধ্যমে ক্ষয়কার্য করে থাকে। যথা—

[1] অবঘর্ষণজনিত ক্ষয়: নদীখাতের সঙ্গে নদীবাহিত প্রস্তরখণ্ডের সংঘর্ষের ফলে ক্ষয়।

[2] ঘর্ষণজনিত ক্ষয় : নদীবাহিত প্রস্তরখণ্ডগুলি একটি অন্যটির সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে বা নিজেদের মধ্যে ঠোকাঠুকিতে ভেঙ্গে গিয়ে প্রস্তরখণ্ড এবং অবশেষে বালুকণায় পরিণত হয়।

[3] অন্যান্য পদ্ধতি: নদীর জলপ্রবাহের ধাক্কায় নদীপথের অপেক্ষাকৃত কোমল ও অসংলগ্ন প্রস্তরখণ্ড স্থানচ্যুত হয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। অনেকসময় রাসায়নিক বিক্রিয়ায় নদীবাহিত প্রস্তরখণ্ডগুলি দ্রবীভূত বা বিয়োজিত হয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এ ছাড়া 7 নদীর জলের বুদবুদের মধ্যেকার বাতাসের প্রচণ্ড = চাপে নদীগর্ভের শিলাস্তর চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

  1. নদী কী কী প্রক্রিয়ায় তার বোঝা বহন করে?

উত্তর: প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নদী তার বোঝা বহন করে। যথা

[1] টান বা আকর্ষণ প্রক্রিয়া: নদীবাহিত বড়ো বড়ো প্রস্তরখণ্ড নদীস্রোতের টান বা আকর্ষণে নদীর তলদেশ দিয়ে গড়াতে গড়াতে এগিয়ে চলে।

[2] লম্ফদান ও ভাসমান প্রক্রিয়া: নদীবাহিত বড়ো বড়ো প্রস্তরখণ্ডের সঙ্গে তলদেশের শিলাখণ্ড ঠোক্কর খেয়ে লাফাতে লাফাতে এগিয়ে চলে। অনেকসময় ছোটো ছোটো প্রস্তরখণ্ড নদীর স্রোতের সঙ্গে ভাসমান অবস্থায় পরিবাহিত হয়।

[3] দ্রবণ প্রক্রিয়া : নদীতে অনেকসময় প্রস্তরখণ্ড = জলে দ্রবীভূত অম্লের সাহায্যে বিয়োজিত হয়ে তা জলস্রোতের সঙ্গে বাহিত হয়ে থাকে।

  1. শাখানদী বদ্বীপ অঞ্চলে গড়ে ওঠার কারণ কী?

উত্তর: শাখানদী বদ্বীপ অঞ্চলে দেখা যায়, কারণ—

[1] নদীর নিম্ন স্রোত বা বদ্বীপ প্রবাহে ভূমির ঢাল অত্যন্ত কমে যাওয়ায় নদীর স্রোতের বেগও কমে যায়।

[2] ফলে, অত্যধিক পলি সঞ্চিত হয়ে নদীতে বড়ো বড়ো চড়ার সৃষ্টি হয়।

[3] এইসব চড়া, পলির বাঁধ এবং কঠিন শিলা এড়িয়ে চলার জন্য নদী বিভিন্ন শাখাপ্রশাখায় বিভক্ত হয়ে প্রবাহিত হয় যেগুলিকে শাখানদী বলে।

  1. বিভিন্ন প্রকার বদ্বীপের শ্রেণিবিভাগ করো?

উত্তর: আকৃতি অনুসারে পৃথিবীর যাবতীয় বদ্বীপকে নিম্নলিখিত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা— (1) ধনুকাকৃতির বদ্বীপ: যেসব বদ্বীপ সমুদ্রের দিকে বাংলা মাত্রাহীন ‘ব’ বা ধনুকের মতো বেঁকে গড়ে ওঠে এবং উপকূল বরাবর দু-দিকে প্রসারিত হতে থাকে তাকে ধনুকাকৃতির বদ্বীপ বলে। গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র, নীল, পো, হোয়াংহো প্রভৃতি নদীর বদ্বীপ এই জাতীয় ৷

[2] তীক্ষ্ণাগ্ন বদ্বীপ : যেসব বদ্বীপ করাতের দাঁতের তীক্ষ্ণ অগ্রভাগের মতো সমুদ্রের দিকে প্রসারিত তাকে তীক্ষ্ণাগ্র বদ্বীপ বলে। ইটালির তাইবার নদীর বদ্বীপ এই জাতীয়।

[3] পঙ্কীপাদ বদ্বীপ: যেসব বদ্বীপ সমুদ্রের দিকে পাখির পায়ের আঙুলের মতো দীর্ঘ ও সংকীর্ণ আকারে প্রসারিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ এই জাতীয়.

  1.  সুন্দরবন অঞ্চলে পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব লেখো?

উত্তর: পৃথিবীব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত কারণে সুন্দরবন অঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি এমনকি বসবাসকারী মানুষ এক ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। যেমন—

[1] উন্নতা বৃদ্ধির ও সমুদ্র জলপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব: বিশ্ব উষ্মায়নের কারণে সমুদ্র জলপৃষ্ঠের উন্নতা বৃদ্ধিজনিত কারণে সুন্দরবনের জলজ বাস্তুতন্ত্র বিপন্নতার মুখে। এ ছাড়াও সমুদ্র জলপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিজনিত কারণে ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, উপকূল ক্ষয় ইত্যাদি ঘটছে ও অনেক দ্বীপ জলের নীচে নিমজ্জিত হচ্ছে।

[2] ঘূর্ণবাত ও মৌসুমি বৃষ্টিপাতের প্রভাব : সুন্দরবন = একটি ঘূর্ণবাত অধ্যুষিত অঞ্চল। এখানে প্রায়শ = ঘূর্ণবাতের আগমন ঘটে। যেমন সাম্প্রতিককালে সৃষ্ট আয়লা ঝড়ে এখানকার ব্যাপক সংখ্যক উদ্ভিদ, প্রাণী. ও জনবসতি ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে এখানকার নদী, নালা, খাল, বিল প্রভৃতিতে জলস্ফীতির ফলে সৃষ্ট বন্যা এখানে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি করছে।

[3] সমুদ্রজলের লবণতা বৃদ্ধি : বিগত কয়েক দশক ধরে এখানকার সমুদ্রজলের লবণতা বৃদ্ধি ম্যানগ্রোভ অরণ্য, জলজ বাস্তুতন্ত্র ও কৃষির ব্যাপকভাবে ক্ষতি করছে।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

  1. নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে ভূমিরূপগুলির সচিত্র ব্যাখ্যা দাও।

উত্তর: ঊর্ধ্ব বা পার্বত্য প্রবাহে ভূমির ঢাল প্রচণ্ড বেশি ও বন্ধুর থাকে বলে এখানে নদীর প্রধান কাজ ক্ষয়কার্য। পাশাপাশি এখানে বহনকার্যও চলতে থাকে। নদীর এই ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপগুলি হল—

[1] গিরিখাত:

উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল খুব বেশি ই থাকে বলে নদী প্রবলবেগে নীচে থামতে থাকে এবং ক্ষয় ক্ষমতাও অধিক হয়। এইসময় নদীর প্রবল স্রোতের আঘাতে অধিক নিম্নক্ষয় ও সামান্য পার্শ্বক্ষয়ের দ্বারা নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও গভীর হয় এবং ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতো গভীর খাতের সৃষ্টি হয়। একে গিরিখাত বা গিরিসংকট বলে।

[2] ক্যানিয়ন:

শুষ্ক মরুভূমি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের অভাবে নদীর পার্শ্বক্ষয় একেবারেই হয় না বলে শুধুমাত্র নিম্নক্ষয়ের দ্বারা শিলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলি আরও গভীর ও সংকীর্ণ উপত্যকার সৃষ্টি করে। এই ইংরেজি “I” অক্ষরের মতো গভীর গিরিখাতকে এবং ক্যানিয়ন বলে।

[3] কৰ্তিত শৈলশিরা : পার্বত্য অঞ্চলে নদীর প্রবল স্রোতের আঘাতে ক্ষয়প্রাপ্ত পর্বতের অভিক্ষিপ্তাংশ বা শৈলশিরাগুলিকে কর্তিত শৈলশিরা বলে।

[4] শৃঙ্খলিত শৈলশিরা : পার্বত্য অঞ্চলে নদীর আঁকাবাঁকা গতিপথে শৈলশিরাগুলি একটি অপরটিকে আড়াল করে রাখলে সেইসব নদীর পাড় বা শৈলশিরাগুলিকে শৃঙ্খলিত শৈলশিরা বলে।

[5] জলপ্রপাত: নদীর পার্বত্য প্রবাহে ঢালের তারতম্যের কারণে নদীর জলরাশি ওপর থেকে নীচে সবেগে আছড়ে পড়লে, তাকে জলপ্রপাত বলে।

[6] মথকূপ : নদীর পার্বত্য প্রবাহে নদীখাতের তলদেশে বর্তুলাকৃতির যে গর্তের সৃষ্টি হয়, তাকে মন্থকূপ বা পটহোল বলে।

[7] প্রপাতকূপ:  জলপ্রপাতের তলদেশে যেখানে জলস্রোতের সঙ্গে প্রস্তরখণ্ড প্রবল বেগে এসে পড়ে সেখানে প্রচণ্ড আঘাতে বিশালাকার হাঁড়ির মতো দেখতে গর্তের সৃষ্টি হয়, যেগুলিকে প্রপাতকূপ বা প্লাঞ্জপুল বলে।